Quantcast
Channel: স্বাস্থ্য – Online Khobor
Viewing all articles
Browse latest Browse all 168

কান পরিষ্কার করা কতোটুক সঠিক জেনে নিন

$
0
0

কান পরিষ্কার করা কতোটুক সঠিক জেনে নিন

অনলাইন খবর ডটকমঃ

 

কান পরিষ্কার করা কতোটুক সঠিক জেনে নিন । কান পাকা বেশ প্রচলিত একটি সমস্যা। অনেক লোকই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনেকেরই বিষটি নিয়ে বিভিন্ন রকম ভুল ধারণা রয়েছে। ১০ নভেম্বর এনটিভির স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২২০১তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী।

প্রশ্ন : কান পাকা রোগের প্রধান কারণ কী?

উত্তর : কান পাকা রোগ আমাদের দেশের অতি সাধারণ একটি রোগ। প্রচুর লোক কান পাকা রোগে ভোগে। কান পাকা রোগ বলতে বোঝায় কান দিয়ে পানি বা পুজ বের হয়। ঊর্ধ্ব শ্বাসনালির যদি প্রদাহ হয় এবং বাচ্চাদের যদি টনসিল বা নাকের পেছনে এক ধরনের টনসিল আছে, যেটিকে আমরা এডিনয়েড বলি, এখানে যদি প্রদাহ হয় সমস্যা হতে পারে।

নাক-কান-গলার সঙ্গে একটি টিউব থাকে, ওই টিউব দিয়ে সংক্রমণ মধ্যকর্ণে চলে যায়। সংক্রমণ হলে ব্যথা করে, মধ্যকর্ণে প্রথম ইফিউশন হয় পানি জমে, তারপর পুজ হয়। এগুলো যদি কানের পর্দা ছিদ্র করে বাইরে চলে আসে সেটি হলে একিউট (স্বল্প মেয়াদি)  কান পাকা হয়।

কান পাকা রোগটি দুই ধরনের হয়। একটি হলো একিউট, প্রাথমিক পর্যয়ে হঠাৎ করে হলো, আরেকটি হলো ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণত বাচ্চাদের এই সমস্যা বেশি হয়। বাচ্চাদের এত ব্যথা হয় যে সারা রাত ঘুমাতে পারে না। তার জ্বর হয়, ব্যথা হয়। কানের মধ্যে লালচে ভাব হয়ে যায়। টনসিলও দেখা যায়, লাল হয়ে যায়। তখন নাকেও সর্দি বা রাইনাইটিস হতে পারে।

প্রশ্ন : একিউট এবং ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদি) কান পাকা রোগ দুটির মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর : একিউটে হলো জ্বর, তীব্র ব্যথা। যাদের ঊর্ধ্ব শ্বাসনালির প্রদাহ, টনসিল বা এডিনয়েড যাদের থাকে এদের এই সমস্যা হতে পারে। আর পর্দা যদি ছিদ্র হয়ে যায় তখন পুজ বাইরে চলে আসে।

এই অবস্থার ১৫ দিন যদি পার হয়ে যায় তখন বলা হয় ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি।

প্রশ্ন : কান পাকা রোগীর করণীয় কী?

উত্তর : একিউট কান পাকা বাচ্চাদের বেশি হয়। আমরা যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুঝি কান পেকেছে তখন আমরা প্রথমে অ্যান্টিবায়োটিক দিই। অ্যান্টি হিসটামিন দিই এবং নাকের ড্রপ দিই।

একটি প্রশ্ন সবাই করে, কান ব্যথা হচ্ছে তবে নাকের ড্রপ দিচ্ছেন কেন? নাকের ড্রপ এ জন্য দেওয়া হয়, যেহেতু একটি টিউব যোগ থাকে। ওই টিউবটি তখন বন্ধ হয়ে যায়। প্রদাহ যেটা হয়েছে এটাকে কমিয়ে টিউবটা খুলে দেওয়া হয়। তাহলেও ভালো হয়ে যায়।

প্রশ্ন: কী কারণে এই সমস্যাটা হচ্ছে সেটি বোঝার জন্য কি কোনো অনুসন্ধানী পরামর্শ দেন?

উত্তর : এটা আমরা অবশ্যই দিই। কানে যাতে পানি না যায়, কান খোঁচানো যাবে না। ঠান্ডা যাতে না লাগে।

প্রশ্ন : কান পাকা রোগের কারণ কী, এর  উৎস জানার জন্য কী কোনো এক্সরে দেন?

উত্তর : কিছু এক্সরে আছে। নাকের পেছনের যে এডিনয়েড আছে সেটির এক্সরে করতে বলি। সাইনাস যদি সঙ্গে থাকে এর এক্সরেও করতে বলি। আর স্বাভাবিক উপদেশ হলো ঠান্ডা লাগাবে না। কান খোঁচাবে না। কানে যেন পানি না যায়। এবং যদি সর্দি বা ঠান্ডা লেগে যায় সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করতে হবে। এটা অবহেলা করা যাবে না।

প্রশ্ন: অনেকে মনে করেন, কানে পানি গেলে কান পাকা রোগ  হয়। এ সম্বন্ধে কিছু বলুন।

উত্তর : এটি একটি ভুল ধারণা। সবাই বলে কানে পানি গিয়েছিল এরপর থেকে কান পাকা শুরু হয়ে গিয়েছে। কথাটি ঠিক নয়। কানে পানি গেলে কান পাকবে না। কারণ পর্দা তো ঠিক আছে। পানিটা এমনিতেই শুকিয়ে যাবে। তবে সবার অভ্যাস হলো কটন বাড দিয়ে একে পরিষ্কার করা। এতে বরং আরো ক্ষতি হতে পারে। এতে সংক্রমণ হতে পারে বহিঃকর্ণে। কারণ বহিঃকর্ণের ত্বক খুব পাতলা। এটি এত পাতলা যে, কটন বাড দিলে তা ছিঁড়ে যেতে পারে। তাই ওখানে সংক্রমণ হয়ে যেতে পারে।

তবে কানে পানি গিয়ে মধ্যকর্নে প্রদাহ বা কান পাকা রোগ সাধারণত হতে পারে না। হতে পারে, যদি কখনো পর্দায় আগে থেকে ছিদ্র থাকে, আঘাতজনিত কারণে বা আগে কোনো কারণে ছিদ্র হয়ে গেছে সে ক্ষেত্রে নদী, পুকুরে গোসল করে পানি চলে গেলে সমস্যা হতে পারে। যদি অসাবধানতাবশত মধ্যকর্নে পানি চলে যায়, তখন সেখানে আবার প্রদাহ হতে পারে।

প্রশ্ন : সেই ছিদ্রটি আছে কি নেইই সেটি রোগী বুঝবে কী করে?

উত্তর : রোগী যদি চিকিৎসকের কাছে কখনো না যায় তখন সে বোঝে না।  যদি কোনো জটিলতা বা উপসর্গ না থাকে, তখন রোগী বোঝে না। অনেক সময় আমরা পরীক্ষা করার জন্য দেখি পর্দায় ছিদ্র আছে। আর যখন কান থেকে পানি আসে তখন রোগী জানে।

প্রশ্ন : আপনি যে পরামর্শ দেন, এর সঙ্গে সঙ্গে কি মেডিকেশন দিয়ে থাকেন?

উত্তর : চিকিৎসা হলো অ্যান্টিবায়োটিক। আর ক্রনিকের ক্ষেত্রে, যদি বারবার পানি আসে আমরা কানে ড্রপ দিই। এবং কানটি জীবাণুমুক্তভাবে পরিষ্কার করতে হবে। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে সাকশন ক্লিনিং করতে হবে। এটি যেখানে সেখানে বা নিজে করা ঠিক নয়।

প্রশ্ন: এই বিষয়ে অনেকেই অপচিকিৎসকের কাছে চলে যান। এতে জটিলতা কী কী হতে পারে?

উত্তর : ফুটপাতে দেখা যায় এ রকম হয়, কান পরিষ্কার করছে। এটি আদৌ স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এর থেকে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। আরো খারাপ দিকে চলে যেতে পারে। এমনকি মধ্যকর্ণের সংক্রমণ থেকে জটিলতাটি মস্তিষ্কেও যেতে পারে। মস্তিস্কেও প্রদাহ ও সংক্রমণ হতে পারে। যদি ভুল চিকিৎসা নেওয়া হয়।

দীর্ঘমেয়াদি যেটি সেটি আবার দুই রকম হয়। একটি হলো টিউবোটিমপিনিক। আরেকটি এটিকয়েন্ট্রাল। এটিকয়েন্ট্রালে কলেসটিওটমা থাকে। কলেসটিওটমা খুব ক্ষতিকর। অনেক সময় এটি আশেপাশের গঠন, হাড় সবগুলোকে নষ্ট করে ফেলে।

প্রশ্ন: কলেসটিওটমা বিষয়টি কী? এটি ভেতরে গিয়ে কী করে?

উত্তর: এটি অনেকটা টিউমারের মতো, এটি বৃদ্ধি হতে থাকে। এ সময় অল্প পানি পড়ে কান থেকে। এবং এটি খুবই দুর্গন্ধযুক্ত হয়। কানে বধিরতা থাকে বেশি। ছিদ্রটি পর্দার পেছনে বা ওপরে থাকে। কানের এক্সরে করা হলে এটি দেখা যায়।

প্রশ্ন: এটি ঠিক করেন কীভাবে?

উত্তর : কোলেসটিউটোমা মস্তিষ্ক চলে যেতে পারে। ২০ বছর আগে আমাদের দেশে এই কান পাকার সঙ্গে যদি মস্তিষ্ক আক্রান্ত হতো ২০ ভাগ লোক মারা যেত। সে জন্য একে মৃত্যুর কারণ বলা হতো। তবে এখন চিকিৎসা অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। এখন অস্ত্রোপচার করলে রোগী ভালো হয়ে যায়।

প্রশ্ন : কান পাকা রোগটি যাতে না হয় এজন্য প্রতিরোধে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে?

উত্তর: কানের যত্ন নিতে হবে। কান খোঁচাবেন না। কানে যাতে পানি না যায় এতে সাবধান থাকতে হবে। আর কানে কটনবাড দেওয়া যাবে না। এটা খুব বদ-অভ্যাস। কানের ময়লা আসলে এমনি বেরিয়ে যায়। বেশি ময়লা জমে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ঠান্ডা লাগানো যাবে না। কানে তেল মাখিয়ে দিলে ময়লা এমনি গলে বেরিয়ে আসে।

The post কান পরিষ্কার করা কতোটুক সঠিক জেনে নিন appeared first on Online Khobor.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 168

Trending Articles