অনলাইন খবর ডটকমঃ
জন্মের কিছুদিন পর থেকে শিশুরা হাতের কাছে যা পায় তাই তাদের মুখে চালান করে দিতে পছন্দ করে। এটি যদি বিপজ্জনক জিনিস না হয় তাহলে সাধারণত তাদের বড় ক্ষতি করে না। কিন্তু সৌদি আরবের চার বছর বয়সী একটি শিশু সম্প্রতি চুলের ক্লিপ খেয়ে নেয়, যা পরে তার কিডনিতে গিয়ে আটকে যায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
শিশুটি কিডনিতে প্রচণ্ড ব্যথার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, তার কিডনিতে গিয়ে পৌঁছেছে একটি চুলের ক্লিপ, যা ববি ক্লিপ নামেই পরিচিত। পরবর্তীতে চিকিৎসকরা তার কিডনিতে সার্জারি করে ক্লিপটি অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন। অপারেশন করে ক্লিপটি বের করার পর কোনো বাড়তি জটিলতা ছাড়াই শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।শিশুটির চিকিৎসক জেদ্দার ন্যাশনাল গার্ড হেলথ অ্যাফেয়ার্সের চিকিৎসক ড. ইয়াসমিন আব্দুলআজিজ ইউসুফ বলেন, ‘শিশুরা বিশ্বের বহু কিছু জানতে পারে তাদের মুখের মাধ্যমে। আর তারা জিনিস উঠাতে পারলেই এ সুযোগ গ্রহণ করে।’
ড. ইয়াসমিন জানান, শিশু মুখে সাধারণ কোনো জিনিস খেয়ে ফেললে সাধারণত তা বড় সমস্যা তৈরি করে না। পাকস্থলি থেকে মলের সঙ্গেই তা বের হয়ে যায়। এক্ষেত্রে বড় জটিলতা খুব বিরল। কিন্তু এ শিশুটি ববি পিন খেয়ে ফেলায় জটিলতা সৃষ্টি হয়।মূলত সমস্যা হয় শিশুর খেয়ে ফেলা জিনিসটি যদি পাতলা কিংবা ধারালো হয়। যেমন পিন, নখ ও মাছের কাটা কিংবা ডিস্ক ব্যাটারি ও চুম্বক। এসব পদার্থ পেটের ভেতর গিয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এ শিশুটির ক্ষেত্রে যে সমস্যা দেখা গিয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে প্রায় তিন মাস যাবৎ পেটের ওপরের ডান পাশে ব্যথা। এছাড়া তার জ্বর ও ঠাণ্ডা সমস্যা ছিল। এরপর তার পেটের এক্সরে পরীক্ষায় ববি পিনটির অস্তিত্ব ধরা পড়ে।কিন্তু পাকস্থলি থেকে কিভাবে ববি পিনটি কিডনিতে গেল? এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, পিনটির প্রান্তভাগ পেটের ভেতর মরিচা পড়ে ধারালো হয়ে যায়। এরপর তা অভ্যন্তরীণ চাপে কিডনির দিকে চলে যায়।চিকিৎসকরা জানান, অতীতে বিভিন্ন ছোট ছোট জিনিস শিশুর পাকস্থলীতে প্রবেশ করার চিকিৎসা করা হয়েছে। কিন্তু পাকস্থলি থেকে কিডনির ভেতর চলে যাওয়ার ঘটনা বিরল।
এছাড়া অনেক শিশুই ছোট ছোট পদার্থ নাকে প্রবেশ করাতে পারে, যা হঠাৎ বোঝা যায় না। এ বিষয়টি বোঝার জন্য তার শ্বাস-প্রশ্বাস খেয়াল রাখতে হবে। যদি শিশুর শ্বাস নিতে কোনো সমস্যা না থাকলেও হঠাৎ করে সমস্যা হয় তাহলে তা দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে।
পরবর্তীতে এ শিশুটির অবস্থার বিস্তারিত ড. ইয়াসমিন যৌথভাবে বিএমজে জার্নালে একটি গবেষণাপত্রে প্রকাশ করেছেন।
The post যেভাবে চুলের ক্লিপ শিশুর কিডনি থেকে উদ্ধার হলো appeared first on Online Khobor.